বায়ুর ক্ষয়কার্য, বহনকার্য ও সঞ্চয়কার্যের প্রক্রিয়াঃ-
বায়ুর ক্ষয়কার্যের প্রক্রিয়াঃ
বায়ু মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে তিনটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষয়কার্য করে থাকে।
◆ অবঘর্ষ ক্ষয়:
মরু অঞ্চলে বায়ুর সাথে বাহিত বালি, ছোটো আকৃতির পাথরখণ্ড প্রভৃতির দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠের শিলাস্তরের সাথে ঘর্ষণে যে ক্ষয় হয় তাকে অবঘর্ষ ক্ষয় বলে।
◆ ঘর্ষণ ক্ষয়:
প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে বিভিন্ন আকৃতির পাথরখণ্ড ও নুড়ি পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে অবশেষে বালুকণায় পরিণত হয়, এই প্রকার ক্ষয়কে ঘর্ষণ ক্ষয় বলে।
◆ অপসারণ ক্ষয়:
শুষ্ক মরু অঞ্চলে প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে আলগা বালুকারাশির এক স্থান থেকে অন্যস্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে অপসারণ ক্ষয় বলে।
বায়ুর বহনকার্যের প্রক্রিয়াঃ
মরু অঞ্চলের সূক্ষ্ম শিথিল পদার্থসমূহ ভাসমান, লম্ফদান ও গড়ানে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবাহিত হয়।
◆ ভাসমান প্রক্রিয়া:
বায়ুপ্রবাহের ফলে অতি সূক্ষ্ম পদার্থসমূহ বায়ুর সাথে ভাসতে ভাসতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়। বায়ুর এইরূপ বহন প্রক্রিয়াকে ভাসমান প্রক্রিয়া বলে।
◆ লম্ফদান প্রক্রিয়া:
অপেক্ষাকৃত মাঝারি আয়তনের বালুকাকণা বায়ুর দ্বারা বাহিত হওয়ার সময় মাটিতে ধাক্কা খেতে খেতে লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে চলে, বায়ুর এরূপ পরিবহন প্রক্রিয়াকে লম্ফদান প্রক্রিয়া বলে।
◆ গড়ানে প্রক্রিয়া:
অপেক্ষাকৃত বড় আয়তনের বালুকণা, নুড়ি, প্রস্তরখন্ড প্রভৃতি বায়ুপ্রবাহের ফলে গড়িয়ে গড়িয়ে প্রবাহিত হয়, বায়ুর এই প্রকার পরিবহন প্রক্রিয়াকে গড়ানে প্রক্রিয়া বলে।
বায়ুর সঞ্চয়কার্যের প্রক্রিয়াঃ
বায়ুর গতিবেগ কমে গেলে অথবা বায়ুর প্রবাহপথে কোনো বাধা উপস্থিত হলে বায়ুবাহিত পদার্থসমূহ সঞ্চিত হয়। বায়ুর এই সঞ্চয়কার্য তিনটি প্রক্রিয়ায় ঘটে থাকে।
◆ অধঃপাত প্রক্রিয়া:
ধীরগতিসম্পন্ন বায়ুপ্রবাহ দ্বারা বাহিত বালি দীর্ঘদিন ধরে ধীরে ধীরে সঞ্চিত হলে তাকে অধঃপাত প্রক্রিয়া বা থিতানো প্রক্রিয়া বলে।
◆ উপলেপন প্রক্রিয়া:
প্রবল বায়ুপ্রবাহে বাহিত পদার্থসমূহ গড়িয়ে গড়িয়ে বা লাফিয়ে লাফিয়ে দূরে গিয়ে সঞ্চিত হলে, তাকে উপলেপন প্রক্রিয়া বলে।
◆ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া:
প্রায় অসম ভূমিভাগে বায়ুবাহিত পদার্থসমূহ মূলত বালি আটকে গিয়ে সঞ্চিত হলে তাকে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বলে।