ভারতের জলবায়ুর ওপর মৌসুমি বায়ুর প্রভাবঃ
ভারতের জলবায়ুর ওপর মৌসুমী বায়ুর প্রভাব সর্বাধিক। তাই ভারতকে মৌসুমী জলবায়ুর দেশ বলা হয়। ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমী বায়ুর প্রভাব গুলি হল নিম্নরুপ:-
◆ ঋতু পরিবর্তনঃ
মৌসুমী বায়ুর আগমন ও প্রত্যাগমনের ওপর নির্ভর করে ভারতের জলবায়ুতে ঋতু পরিবর্তন হয়ে থাকে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ ও শীত- পর্যায়ক্রমে এই চারটি ঋতু সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়।
◆ গ্রীষ্মকাল আর্দ্র ও শীতকাল শুষ্কঃ
জলীয় বাষ্পপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতে গ্রীষ্মকাল আর্দ্র প্রকৃতির ও জলীয় বাষ্পহীন উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে শীতকাল শুষ্ক প্রকৃতির হয়।
◆ বৃষ্টিপাতঃ
ভারতের মোট বৃষ্টিপাতের অধিকাংশ (প্রায় 85% থেকে 90%) বৃষ্টিপাতই ঘটে থাকে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে। সমুদ্র থেকে আগত জলীয় বাষ্পপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে এবং সারা ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।
◆ বৃষ্টিপাতের অসম বন্টনঃ
মৌসুমী বায়ুর প্রভাব ভারতের সর্বত্র সমানভাবে পড়ে না। তাই ভারতে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের বন্টনও সর্বত্র সমান নয়। ভারতের পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে।
◆ খরা ও বন্যার প্রাদুর্ভাবঃ
মৌসুমী বায়ু খামখেয়ালী চরিত্রের হওয়ায় কোনো বছর অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা এবং কোনো বছর স্বল্প বৃষ্টিপাতের কারণে খরার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
◆ বায়ুপ্রবাহঃ
গ্রীষ্মকালে সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালে স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হয়।
◆ ঘূর্ণবাতের উৎপত্তিঃ
প্রত্যাবর্তনকারী মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে শরৎকালে বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয় তার প্রভাবে পূর্ব উপকূল বরাবর মাঝে মাঝে প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়।
◆ বছরে দু'বার বৃষ্টিঃ
তামিলনাড়ুর করমন্ডল উপকূলে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বছরে দুবার বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়, একবার দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বর্ষাকালে ও আর একবার উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে শীতকালে।