Ads Area

Web Design Course Admission

ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকসমূহের ব‍্যাখ‍্যা দাও। বা, ভারতের জলবায়ুর বৈচিত্র‍্যের কারনগুলি বর্ণনা কর।

ভারতের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকঃ-


বৃহদায়তন এই ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের জলবায়ুর মধ্যে বৈচিত্র‍্য বা তারতম‍্য দেখা যায়। ভারতের এই জলবায়ুর বৈচিত্র্যের কারণগুলি বা জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক গুলি হল নিম্নরূপ:-

◆ অক্ষাংশঃ 
ভারত দক্ষিণে 8°4' উত্তর অক্ষাংশ থেকে উত্তরে 37°6' উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত এবং ভারতের প্রায় মাঝখান দিয়ে বিস্তৃত হয়েছে কর্কটক্রান্তি রেখা। ভারতের এই প্রকার অক্ষাংশগত অবস্থানের জন্য দক্ষিনাংশে উষ্ণ-আর্দ্র নিরক্ষীয় জলবায়ু, মধ্যাংশে ক্রান্তীয় জলবায়ু এবং উত্তরাংশে উপক্রান্তীয় প্রকৃতির জলবায়ু দেখা যায়।

◆ উচ্চতাঃ 
সাধারণত সমুদ্রসমতল থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। তাই উত্তরে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের উচ্চতা অধিক হওয়ায় জলবায়ু শীতল প্রকৃতির, আবার হিমালয়ের দক্ষিণের সমভূমি অঞ্চলের উষ্ণতা অধিক।

◆ পর্বতের অবস্থানঃ 
পর্বতের অবস্থান বায়ুপ্রবাহকে বাধা দেয় এবং বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে। জলীয় বাষ্পপূর্ণ মৌসুমী বায়ু হিমালয় পর্বতের দক্ষিণ ঢালে, পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে, মেঘালয় মালভূমিতে পর্বতের দক্ষিণ ঢালে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং অন্যদিকে পর্বতের বিপরীত ঢালে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। আবার উত্তরে হিমালয় পর্বতের অবস্থানের জন্য শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে আগত অতি শীতল বায়ু ভারতে প্রবেশ করতে পারে না। এবং ভারত তীব্র শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পায়।

◆ সমুদ্র থেকে দূরত্বঃ 
উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম ভারত সমুদ্র থেকে অধিক দূরে অবস্থিত হওয়ায় জলবায়ুর চরমভাব লক্ষ্য করা যায় এবং উপদ্বীপীয় দক্ষিণ ভারতের তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় দক্ষিণ ভারতে সমুদ্রের প্রভাব বেশি, তাই জলবায়ু অনেকটা সমভাবাপন্ন প্রকৃতির।

◆ মৌসুমী বায়ুর প্রভাবঃ 
ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমী বায়ুর প্রভাব সর্বাধিক। ভারতে বর্ষাকালের সূচনা হয় মৌসুমী বায়ুর আগমনের ফলে, এবং প্রত্যাগমনের দ্বারা শীতকাল। মৌসুমী বায়ুর খামখেয়ালীপনার জন্য কোনো বছর অনাবৃষ্টির কারণে খরা এবং কোনো বছর অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা যায়।

◆ এল নিনোর প্রভাবঃ 
যে বছরগুলোতে দক্ষিণ-পশান্ত মহাসাগরে এল নিনোর আবির্ভাব ঘটে, সেই এল নিনো বছর গুলিতে ভারতে বৃষ্টিপাত কম হয় এবং খরার তীব্রতা বাড়ে।

◆ মৃত্তিকাঃ 
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৃত্তিকা ভারতের জলবায়ুকে বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। শুষ্ক বালি ও পাথুরে জমি সূর্যকিরণে সহজে উত্তপ্ত হয় বলে উষ্ণতা বেশি, আবার রাতে তাপ বিকিরণ করে দ্রুত শীতল হয়ে যায়। ফলে জলবায়ুর চরমভাব দেখা যায়। তাই বালুকাময় মরুভূমি অঞ্চল এবং প্রস্তরময় ভূমিভাগে জলবায়ু চরম প্রকৃতির হয়।

◆ স্বাভাবিক উদ্ভিদঃ 
উদ্ভিদ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। যেখানে অধিক পরিমাণ স্বাভাবিক উদ্ভিদের সমাবেশ দেখা যায় সেখানে বাষ্পীয় প্রস্বেদন অধিক মাত্রায় হওয়ায় বৃষ্টিপাত বেশি হয় এবং উষ্ণতার প্রসারও কম হয়।

◆ ঘূর্ণবাতঃ 
আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের প্রভাবে উপকূলের রাজ্যগুলিতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি সংঘটিত হয় এবং আবহাওয়া মনোরম প্রকৃতির হয়।


Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area