Ads Area

Web Design Course Admission

নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপঃ

উচ্চপ্রবাহে ঢাল অধিক হওয়ার জন্য নদীর গতিবেগও অধিক হয়। ফলে গতিবেগ হওয়ার কারণে ক্ষয়কার্যও প্রাধান্য লাভ করে।তাই নদীর ক্ষয়কার্যে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির প্রায় অধিকাংশই নদীর উচ্চপ্রবাহে দেখা যায়।


নদীর ক্ষয়কার্যে সৃষ্ট ভূমিরুপসমূহঃ-


১। 'I' আকৃতির উপত্যকাঃ- 

পার্বত্য অঞ্চলে প্রবল জলস্রোত এবং বাহিত শিলাখন্ডের সঙ্গে নদীখাতের ঘর্ষণের ফলে পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অধিক হয়। এর ফলে নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর হয়ে ইংরেজি 'I' আকৃতির মতো হয়। একে 'I' আকৃতির উপত্যকা বলে।


২। 'V' আকৃতির উপত্যকাঃ-

পার্বত্য অঞ্চলে প্রবল জলস্রোত এবং শিলাখন্ডের ঘর্ষণের সঙ্গে ভূমিক্ষয় এবং ধ্বসের ফলে নিম্নক্ষয়ের সঙ্গে সঙ্গে পার্শ্বক্ষয়ও হয়। এর ফলে নদী উপত্যকা অনেকটা 'V' অক্ষরের মতো হয়। একে 'V' আকৃতির নদী উপত্যকা বলে।


৩। গিরিখাত ও ক্যানিয়নঃ-

পার্বত্য অঞ্চলে ব্যাপক নিম্নক্ষয়ের ফলে যে সংকীর্ণ ও গভীর নদী উপত্যকার সৃষ্টি হয়, তাকে গিরিখাত বলে।

উদাঃ ইয়াংসি নদীর ইচাং গিরিখাত


শুষ্ক মরু অঞ্চলে নিম্নক্ষয়ের ফলে যে সংকীর্ণ ও গভীর নদী উপত্যকার সৃষ্টি হয় তাকে ক্যানিয়ন বলে।

উদাঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন


৪। জলপ্রপাতঃ-

 নদীর গতিপথে কঠিন ও নরম শিলাস্তর ওপর-নীচে আড়াআড়ি ভাবে থাকলে প্রবল স্রোতে ওপরের কঠিন শিলাস্তর ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নীচের নরম শিলাস্তর বেরিয়ে পড়ে। এর ফলে নদীস্রোত হঠাৎ খাড়া ঢাল থেকে প্রবল বেগে নীচে পড়ে। একে বলে জলপ্রপাত।

উদাঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লরেন্স নদীর ওপর নায়াগ্রা জলপ্রপাত।


৫। খরস্রোতঃ-

নদীর গতিপথে কঠিন ও নরম শিলাস্তর একটির পর একটি লম্বালম্বিভাবে থাকলে কঠিন শিলাস্তরের তুলনায় নরম শিলাস্তর তাড়াতাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কয়েকটি ধাপের সৃষ্টি করে। নদী তখন একটির পর একটি ধাপ পেরিয়ে দ্রুতবেগে নীচে নেমে আসে, একে খরস্রোত বলে।


৬। মন্থকূপঃ- 

নদীর প্রবল স্রোতের সঙ্গে বাহিত বড় বড় পাথরখন্ড ও নদীখাতের সংঘর্ষের ফলে নদীর বুকে মাঝে মাঝে কেটলির মতো যে গর্তের সৃষ্টি হয়, এগুলিকে বলা হয় মন্থকূপ।

উদাঃ দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লাইড নদীখাতে মন্থকূপ দেখা যায়।


৭। প্রপাতকূপঃ- 

জলপ্রপাতের নীচে যেখানে জল এসে পড়ে সেখানে জলস্রোতের প্রবল আঘাতে বড় আকারের হাঁড়ির মতো গর্তের সৃষ্টি হলে, তাকে প্রপাতকূপ বলে।

উদাঃ সুবর্ণরেখা নদীর হুড্রু জলপ্রপাতের নীচে প্রপাতকূপ সৃষ্টি হয়েছে।


৮। আবদ্ধ শৈলশিরাঃ- 

পার্বত্য অঞ্চলে অনেকসময় পাহাড় বা শৈলশিরাসমূহ নদীর গতিপথে এমনভাবে বাধার সৃষ্টি করে যে, সেই বাধা এড়াতে নদী এঁকে-বেঁকে প্রবাহিত হয়। এই অবস্থায় শৈলশিরাগুলিকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন ওগুলি আবদ্ধ হয়ে আছে, একেই বলে আবদ্ধ শৈলশিরা।

উদাঃ তিস্তা, তোর্সা প্রভৃতি পার্বত্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলির উচ্চপ্রবাহে এইধরনের আবদ্ধ শৈলশিরা দেখা যায়।


৯। কর্তিত শৈলশিরাঃ- 

পার্বত্য অঞ্চলে নদীর জলস্রোত হঠাৎ বেড়ে গেলে  নদী পাহাড়ের শৈলশিরাগুলিকে কেটে তুলনামূলক ভাবে সোজাপথে প্রবাহিত হয়। একেই কর্তিত শৈলশিরা বলা হয়।

উদাঃ তিস্তা ও মহানন্দা নদীর উচ্চপ্রবাহে এরুপ কর্তিত শৈলশিরা দেখা যায়।

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area