গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি ও বিক্ষিপ্ত জনবসতির পার্থক্যঃ-
👉 সংজ্ঞা
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
নির্দিষ্ট এলাকায় একই পরিবেশে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে সংঘবদ্ধভাবে যে জনবসতি গড়ে ওঠে তাকে গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি বলে।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
নির্দিষ্ট পরিসর অঞ্চলে একে অন্যের থেকে দূরে দূরে প্রায় সংযোগহীন ও সম্পর্কহীন অবস্থায় যে জনবসতি গড়ে ওঠে তাকে বিক্ষিপ্ত জনবসতি বলে।
👉 গড়ে ওঠার পরিবেশ
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
প্রায় সমতল প্রকৃতির ভূ প্রাকৃতিক পরিবেশ, উর্বর মৃত্তিকাসমৃদ্ধ অঞ্চল এবং মনোরম জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে সাধারণত এই প্রকার জনবসতি গড়ে ওঠে।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
বন্ধুর ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চল, গভীর অরণ্য অঞ্চল, চরম প্রতিকূল জলবায়ু ও অন্যান্য প্রতিকূল পরিবেশে সাধারণত বিক্ষিপ্ত জনবসতি গড়ে ওঠে।
👉 বাড়িগুলির পারস্পরিক দূরত্ব
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
বাড়ি গুলির মধ্যে পারস্পরিক ব্যবধান খুব কম থাকে। অর্থাৎ, বাড়িগুলি কাছাকাছি অবস্থান করে।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
বসতবাড়ি গুলির মধ্যে পারস্পরিক ব্যবধান বেশি হয়। অর্থাৎ, বাড়িগুলি দূরে দূরে অবস্থান করে।
👉 নিরাপত্তার অভাব
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
বসতবাড়িগুলি কাছাকাছি থাকায় এই ধরনের বসতিতে নিরাপত্তার অভাব দেখা যায় না।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
বসতবাড়িগুলির মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বেশি হওয়ায় নিরাপত্তার যথেষ্ট অভাব থাকে।
👉 সামাজিক সুযোগ-সুবিধা
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতিতে সামাজিক সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
বসতিগুলি বিচ্ছিন্ন বলে এই প্রকার জনবসতিতে সামাজিক সুযোগ-সুবিধা খুবই কম।
👉 অধিবাসীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
এরূপ বসতিতে অধিবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
এরুপ বসতিতে বসবাসকারী অধিবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক তেমন গড়ে ওঠে না।
👉 জীবিকা
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
এই প্রকার জনবসতির প্রধান জীবিকা মূলত কৃষিকাজ।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
এই প্রকার জনবসতির প্রধান জীবিকা পশুপালন, কাঠ সংগ্রহ প্রভৃতি।
👉 শ্রেণিবিভাগ
◆ গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি
প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উপাদানগুলির গুণগতমান স্থানীয়ভাবে পরিবর্তিত হলে গোষ্ঠীবদ্ধ বসতিগুলি এককেন্দ্রিক, দ্বি-কেন্দ্রিক বা বহুকেন্দ্রিক হতে পারে।
◆ বিক্ষিপ্ত জনবসতি
পরিবেশের পার্থক্য অনুযায়ী এই প্রকার বসতিগুলি নিয়মিত ও অনিয়মিত ভাবে গড়ে ওঠে।