বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বন্টনের ওপর পরিব্রাজনের প্রভাবঃ-
বিশ্বের সর্বত্র জনসংখ্যা সমান হারে বন্টিত নয়। কোথাও জনসংখ্যা খুব বেশি আবার কোথাও খুব কম। জনসংখ্যার এই অসম বন্টনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে পরিব্রাজন। পরিব্রাজনের ফলে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বন্টনের ওপর যে প্রভাব লক্ষ্য করা যায় সেগুলি হল---
◆ শ্রমশক্তির ঘাটতি:
বহির্মুখী পরিব্রাজনের ফলে উৎস অঞ্চলে জনসংখ্যা কমে, ফলে জমির উপর জনসংখ্যার চাপ কিছুটা কমে। তবে কোনো অঞ্চল থেকে দক্ষ শ্রমশক্তির বহির্মুখী পরিব্রাজনের ফলে শ্রমশক্তির ঘাটতি দেখা যায়।
◆ জনসংখ্যার অসম বৃদ্ধি:
যে অঞ্চলে মানুষের অন্তর্মুখী পরিব্রাজন ঘটে সেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আবার একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে অধিক মাত্রায় অভিবাসনের ফলে জনাধিক্য বা জনবিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
◆ জনঘনত্বের তারতম্য:
পরিব্রাজনের কারণে কোনো অঞ্চলে জনঘনত্বের তারতম্য ঘটে। অভিবাসনের ফলে কোনো অঞ্চলে যেমন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তেমনি বাস্তুত্যাগের ফলে জনঘনত্ব হ্রাস পায়।
◆ মানবসম্পদের যোগান:
গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে দক্ষ শ্রমিকের প্রচরনে বা আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে মেধার আগমনে শহরাঞ্চল বা উন্নত দেশে মানব সম্পদের যোগান বাড়ে।
◆ নির্ভরশীলতার অনুপাত বৃদ্ধি:
প্রাপ্তবয়স্ক কর্মীদের বহির্মুখী পরিব্রাজন ঘটলে ওই অঞ্চলে জনসংখ্যার নির্ভরশীলতার অনুপাত বৃদ্ধি পায়।
◆ জনতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ:
পরিব্রাজনের কারণে জনতাত্ত্বিক বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, যেমন- জন্মহার, মৃত্যুহার বা স্বাক্ষরতার শতকরা হার প্রভৃতি বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রিত ও পরিবর্তিত হয়।
◆ বয়স-লিঙ্গ কাঠামো পরিবর্তন:
লিঙ্গ পার্থক্যে পুরুষদের পরিব্রাজনের মাত্রা বেশি। আবার, বয়স পার্থক্যে অধিকাংশ পরিব্রাজনকারী যুবক। এ কারণে পরিব্রাজনের ফলে কোনো অঞ্চলে বয়স-লিঙ্গ কাঠামো পরিবর্তিত হয়।
