পারমাণবিক শক্তির সুবিধা ও অসুবিধা
পারমাণবিক শক্তির সুবিধা ও অসুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ---
👉 পারমাণবিক শক্তির সুবিধাঃ
🔷 কম পরিমাণ কাঁচামালের ব্যবহার: পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনে খুব বেশি পরিমাণ কাঁচামালের প্রয়োজন হয় না। ফিসন ও ফিউসন পদ্ধতিতে অতি অল্প পরিমাণ কাঁচামাল ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে শক্তি উৎপাদন করা যায়।
🔷 স্বল্প উৎপাদন ব্যয়: পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্রে স্বল্প পরিমাণ কাঁচামাল ব্যবহৃত হওয়ায় একক প্রতি উৎপাদন ব্যয় অনেক কম হয়।
🔷 কম মাত্রায় পরিবেশ দূষণ: পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনে ধোঁয়া বা গ্যাসের সৃষ্টি হয় না। এছাড়া, যে স্বল্প পরিমাণ বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয় তার সংরক্ষণ করা সম্ভব। ফলে এর থেকে তেমন বেশি মাত্রায় পরিবেশ দূষণ ঘটে না।
🔷 সর্বত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন: খুব সামান্য পরিমাণ কাঁচামাল ব্যবহৃত হওয়ায় পরিবহনের সুবিধার কারণে যে কোনো স্থানে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব।
👉 পারমাণবিক শক্তির অসুবিধাঃ
🔷 তেজস্ক্রিয় সংক্রমণ: পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্র থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থের সংস্পর্শে এলে মানুষের স্বাস্থ্যহানি ঘটে এবং শরিরে ক্যান্সার রোগের সৃষ্টি হয়। এছাড়া, মাটিতে যে তেজস্ক্রিয়তা থেকে যায় জীবজগতের ওপর তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ে।
🔷 বর্জ্য সংরক্ষণে অসুবিধা: পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্র থেকে যে বর্জ্য নির্গত হয়, তা পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই বর্জ্য পদার্থ সংরক্ষণের এখনো কোনো উপযুক্ত স্থান আবিষ্কৃত হয়নি।
🔷 কাঁচামালের স্বল্প যোগান: পারমাণবিক শক্তির প্রধান কাঁচামাল ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম শুধুমাত্র বিশ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গাতেই পাওয়া যায়। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পর্যাপ্ত কাঁচামালের যোগানে ঘাটতি দেখা যায়।
🔷 প্রযুক্তিগত সমস্যা: পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির। আর, বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এই প্রযুক্তিকে তেমনভাবে আয়ত্ত করতে পারেনি।
🔷 শক্তির অপব্যবহার: পারমাণবিক শক্তিকে ইতিবাচক ক্ষেত্রে ব্যবহার না করে অনেক সময় ধ্বংসাত্মক পরমাণু বোমা তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়, যা পৃথিবীতে অন্যতম আশঙ্কার কারণ।