Ads Area

Web Design Course Admission

নদীর ক্ষয়কার্য, বহনকার্য ও সঞ্চয়কার্য‌‌:

নদীর কার্য: 
নদীর কার্যকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।  যথা: ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়। নদীর ক্ষয়কার্যের প্রাধান্য দেখা যায় উচ্চ ও মধ্যগতিতে, বহনকার্য উচ্চ, মধ্য, নিম্ন তিনটি গতিতেই লক্ষ করা যায় এবং ‌সঞ্চয়কার্য ঘটে মূলত মধ্য ও নিম্ন গতিতে।

ক্ষয়কার্যের প্রক্রিয়া : নদী মূলত পাঁচটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষয়কার্য সম্পন্ন করে।

জলপ্রবাহজনিত ক্ষয়: জলস্রোতের প্রবল আঘাতে নদীগর্ভ ও নদীপাড়ের নরম শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ক্ষয়কার্যের এই প্রক্রিয়াকে জলপ্রবাহজনিত ক্ষয় বলে।
 ২। অবঘর্ষজনিত ক্ষয়: নদীর জলের সঙ্গে বাহিত বিভিন্ন আকৃতির শিলাখণ্ডের আঘাতে নদীর তলদেশ ও পার্শ্বদেশের ক্ষয় হয়।এই ধরনের ক্ষয় প্রক্রিয়াকে অবঘর্ষজনিত ক্ষয় বলে।
। ঘর্ষণজনিত ক্ষয়: নদীর জলের সঙ্গে বাহিত বিভিন্ন আকৃতির শিলাখণ্ড পরস্পর পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে ছোটো ছোটো নুুড়ি,বালি,পলিতে পরিণত হয়। এই প্রকার ক্ষয়কে ঘর্ষণজনিত ক্ষয় বলে।
৪। দ্রবণজনিত ক্ষয়: নদীর জলে দ্রবীভূত অম্লের প্রভাবে দ্রবণীয় শিলা গলে গিয়ে বা দ্রবীভূত হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এই প্রকার ক্ষয়কে দ্রবণজনিত ক্ষয় বলে।
৫। বুদবুদজনিত ক্ষয়: নদীর জলে সৃষ্ট বুদবুদের মধ্যে বাতাসের চাপ আবদ্ধ থাকে। এই বুদবুদ হঠাৎ ফেটে গেলে শব্দের কম্পন তরঙ্গের আঘাতে শিলায় ক্ষয় দেখা যায়, একে বুদবুদজনিত ক্ষয় বলে।


বহনকার্যের প্রক্রিয়া:  নদী জলস্রোতের মাধ্যমে ক্ষয়জাত পদার্থ সমূূহকে মোহনার দিকে বয়ে নিয়ে   চলে। ক্ষয়জাত পদার্থসমূহের এই অপসারণ প্রক্রিয়াকে বহন প্রক্রিয়া বলে।
নদী মূলত চারটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বহনকার্য সম্পন্ন করে।
। ভাসমান প্রক্রিয়া: অতি সূক্ষ্ম পদার্থসমূহ নদীর জলের স্রোতে ভাসতে ভাসতে পরিবাহিত হয়। বহন কার্যের এই প্রক্রিয়াকে ভাসমান প্রক্রিয়া বলে।
পলি,বালি,কাদা প্রভৃতি সূক্ষ্ম ও হালকা পদার্থসমূহ এই প্রক্রিয়ায় বাহিত হয়।
২। লম্ফদান প্রক্রিয়া: মাঝারি আকৃতির নুড়ি ও পাথরখন্ড জলস্রোতে বাহিত হওয়ার সময় নদীর তলদেশে ধাক্কা খেয়ে লাফাতে লাফাতে অগ্রসর হয়। এই বহন প্রক্রিয়া কে লম্ফদান প্রক্রিয়া বলে।
৩। গড়ানে বা আকর্ষণ প্রক্রিয়া: অপেক্ষাকৃত বড় আকৃতির শিলাখণ্ড স্রোতের টানে নদীর তলদেশ দিয়েে গড়িয়ে গড়িয়ে প্রবাহিত হয়। পরিবহনের এই প্রক্রিয়াকেই আকর্ষণ বা গড়ানে প্রক্রিয়া বলে।
৪। দ্রবণ প্রক্রিয়া: দ্রবণীয় পদার্থসমূহ নদীর জলের সঙ্গে দ্রবীভূত অবস্থায় বাহিত হয়। বহন কার্যের এই প্রক্রিয়াকে দ্রবণ প্রক্রিয়া বলে।
প্রধানত চুনজাতীয় ও লবণ জাতীয় শিলা এই প্রক্রিয়ায় বাহিত হয়।


নদীর সঞ্চয়কার্য: নদীর মধ্যগতি ও নিম্নগতিতে নদীখাতের বিভিন্ন অংশে এবং মোহনার নিকট অগভীর অংশে নদীবাহিত পদার্থসমূহ জমা হয়। এই ধরনের প্রক্রিয়াকে নদীর সঞ্চয়কার্য বলে।
সঞ্চয়কার্যের নির্দিষ্ট কোনো প্রক্রিয়ার উল্লেখ না থাকলেও নদী কয়েকটি অবস্থায় সঞ্চয় করে।ট
নদীতে সঞ্চয়ের বিভিন্ন অবস্থা:  নদী প্রধানত পাঁচটি অবস্থায় সঞ্চয় করে। যেসব কারণে বা যে অবস্থায় নদীর সঞ্চয়কার্য ঘটে থাকে, সেগুলি হল:-
১। নদীর গতিপথে ভূমির ঢাল কমে গেলে গতিবেগ কমে যাওয়ায় নদীর বহন ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে নদীবাহিত পদার্থসমূহ সঞ্চিত হয়।
২। নদীতে বোঝার পরিমাণ বেড়ে গেলে নদী তা বহন করতে পারে না। ফলে নদী গর্ভে তা সঞ্চিত হয়।
৩। নদীতে জলের পরিমাণ কমে গেলে, নদীর বহন ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে নদীবাহিত পদার্থসমূহ নদীখাতে সঞ্চিত হয়।
৪।নদী প্রবাহপথে বাধার সম্মুখীন হলে নদীর গতিবেগ কমে যায়। ফলে বাধার সম্মুখ অংশে বাহিত পদার্থসমূহ সঞ্চিত হয়।
৫। কোনো হ্রদের মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হলে নদীর গতি মন্থর হয় এবং ওই অংশে নদীবাহিত উপাদানগুলি সঞ্চিত হয়।

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area