বাস্তুতন্ত্রে শক্তি বা পুষ্টি পদার্থ একটিমাত্র খাদ্যশৃঙ্খলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত না হয়ে আন্তঃসম্পর্কযুক্ত একাধিক খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে যে জালিকা গঠন করে তাকে খাদ্যজাল বলে।
উদা:-
ঘাস ➡ খরগোশ ↘
➡ বাঘ ▶মৃতদেহ ⤵
লতা,গুল্ম ➡ হরিণ ↗
শস্য ➡ ইঁদুর ➡ পেঁচা ▶মৃতদেহ ➡ শকুন
ঘাস ➡ ফড়িং ➡ ব্যাঙ ➡ সাপ ➡ ময়ুর ▶মৃতদেহ⤴
খাদ্যজালের বৈশিষ্ট্যঃ খাদ্যজালের বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরুপ-
◆ শক্তি ও পুষ্টি পদার্থের পরিবহন আন্তঃসম্পর্ক যুক্ত অনেকগুলি খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
◆ পুষ্টির বিভিন্ন স্তরে আন্তঃসম্পর্কযুক্ত একাধিক খাদ্য ও খাদক উপস্থিত থাকে।
◆ নিচের পুষ্টিস্তর থেকে ওপরের বিভিন্ন পুষ্টিস্তরে খাদ্য শক্তির বহুমুখী প্রবাহ ঘটে।
◆ পুষ্টিপদার্থ অনেকগুলি পথে জটিলভাবে স্থানান্তরিত হয় বা প্রবাহিত হয়।
◆ খাদ্যজালে প্রত্যেক প্রজাতির জীবের সংখ্যা প্রচুর থাকে এবং জীববৈচিত্র্যও অধিক হয়।
◆ খাদ্যজাল সম্পূর্ণভাবে খাদ্যশৃঙ্খলের ওপর নির্ভরশীল।
◆ খাদ্যজালে একটি জীবগোষ্ঠী বিভিন্ন পুষ্টিস্তরে অবস্থান করতে পারে।
◆ একটি পরিবেশে সাধারণত একটি খাদ্যজাল বিদ্যমান থাকে।
খাদ্যজালের গুরুত্বঃ
◆ বাস্তুতন্ত্র তথা সমগ্র জীবমন্ডলের অস্তিত্ব রক্ষায় খাদ্যজালের গুরুত্ব অপরিসীম।
◆ খাদ্যজালের মাধ্যমে স্বভোজী উদ্ভিদ থেকে খাদ্য ও শক্তি একাধিক পথে বিভিন্ন পুষ্টিস্তরে স্থানান্তরিত হয়।
◆ বাস্তুতন্ত্রের বিভিন্ন জীবগোষ্ঠীর পারস্পরিক আন্তঃসম্পর্কের প্রকৃত স্বরূপ ফুটে ওঠে খাদ্যজালের মাধ্যমে।
এক্ষেত্রে কোন প্রজাতি বিলুপ্ত হলে অসংখ্য প্রজাতির উপস্থিতির জন্য শক্তি সরবরাহ অক্ষুন্ন থাকে।
◆ পরিবেশের সজীব উপাদানগুলির ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে খাদ্যজালের গুরুত্ব অপরিহার্য।
◆ একাধিক খাদ্যশৃঙ্খলের উপস্থিতির কারণে খাদ্যজালে জীববৈচিত্র্য অধিক হয়।