Ads Area

Web Design Course Admission

ভূমধ‍্যসাগরীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য

ভূমধ‍্যসাগরীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যঃ-
উভয় গোলার্ধে 30° থেকে 45° অক্ষাংশের মধ্যে উপক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিম অংশে এইপ্রকার জলবায়ু বিরাজ করে। 
কোপেনের জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগ অনুসারে 'Cs' প্রকৃতির জলবায়ু হল ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু।
পৃথিবীর মোট স্থলভাগের মাত্র 1.7 শতাংশ অঞ্চলে এই জলবায়ু দেখা যায়।

ভূমধ‍্যসাগরের তীরবর্তী দেশগুলিতে প্রধানত এইপ্রকার জলবায়ুর বিস্তার ও প্রভাব বেশি বলে একে ভূমধ‍্যসাগরীয় জলবায়ু বলে।
এই জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল-----

1. উষ্ণতা সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যঃ- 

I. গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা:- এই জলবায়ু অঞ্চলে উষ্ণতম মাসের গড় উষ্ণতা থাকে 21°সে. থেকে 27°সে.
গ্রীষ্মকালে আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় দিনের বেলা তাপমাত্রা থাকে 32° থেকে 35° সে.। রাতে তাপমাত্রা অনেক কমে যায়।
II. শীতকালীন উষ্ণতা:- শীতকালে এই অঞ্চলের জলবায়ু মৃদুভাবাপন্ন প্রকৃতির। শীতলতম মাসের উষ্ণতা থাকে 5°C থেকে 10°C. মেঘাচ্ছন্নতার কারণে শীতকালে রাত্রিকালীন তাপমাত্রা বিশেষ কমে না।
III. বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর:- বার্ষিক গড় উষ্ণতার প্রসর অর্থাৎ, শীত ও গ্রীষ্মের উষ্ণতার পার্থক‍্য হয় 11°C থেকে 17°C. এবং গ্রীষ্মকালে দিন-রাত্রির উষ্ণতার পার্থক‍্য হয় 20° থেকে 28°C.
উপকূল থেকে মহাদেশের অভ্যন্তরভাগের দিকে দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে উষ্ণতার প্রসর হয় বেশি।

2. বায়ুচাপ ও বায়ুপ্রবাহ সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যঃ-

I. চাপবলয়ের অবস্থান:- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় অবস্থান করে।
II. চাপবলয়ের স্থান পরিবর্তন:- সূর্যের উত্তরায়নের সঙ্গে সঙ্গে বায়ুচাপবলয় ও বায়ুবলয়গুলি উত্তরে এবং দক্ষিনায়নের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণে সরে যায়।
III. ঋতুভিত্তিক বায়ুপ্রবাহ:- ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু ও শীতকালে পশ্চিমা বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে আয়ন বায়ু ও শীতকালে উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়।
IV. স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ:- জলবায়ু অঞ্চলে অসংখ্য ভিন্নধর্মী স্থানীয় বায়ুর আবির্ভাব ঘটে। গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় খামসিন, সিরক্কো, ঘিবলি, ব্রিকফিল্ডার প্রভৃতি উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু এবং শীতকালে প্রবাহিত হয় মিস্ট্রাল, বোরা প্রভৃতি শুষ্ক ও শীতল বায়ু।

3. বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যঃ-

I. ঋতুভিত্তিক আবহাওয়া:- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও শীতকাল আর্দ্র প্রকৃতির। শীতকালে ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চল পশ্চিমা বায়ুুর দ্বারা প্রভাবিত হয়। এবং মেরুপ্রদেশ থেকে আগত শীতল বায়ুর প্রভাবে নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়। এই কারণে শীতকাল আর্দ্র প্রকৃতির।
গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চলে উচ্চচাপ বিরাজ করে বলে বাতাস নিম্নগামী হয়ে উষ্ণ হয়ে ওঠে। ফলে আবহাওয়া উষ্ণ ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়। তাই গ্রীষ্মকাল বৃষ্টিহীন।
II. বৃষ্টিপাতের পরিমাণ:- এই জলবায়ু অঞ্চলে মহাদেশ গুলির পশ্চিমপ্রান্তে গড়ে 40 সেন্টিমিটার থেকে 90 সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তবে পশ্চিমা বায়ুুর গতিপথে উচ্চভূমি অবস্থান করলে কিছুটা অধিক পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, প্রায় 130 সেন্টিমিটারের কাছাকাছি।
III. বৃষ্টিপাতের প্রকৃতি:- সমুদ্র থেকে আগত আর্দ্র পশ্চিমা বায়ুুুর প্রভাবে ভূমধ্যসাগর ও তার উপকূলবর্তী অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এছাড়া এই সময় শীতল বায়ুপুঞ্জের আগমনে সৃষ্ট নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে এই অঞ্চলে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়।
IV. তুষারপাত:- এই জলবায়ু অঞ্চলের সর্বত্র তুষারপাত হয় না। শীতকালে মেরুমুখী প্রান্তের দিকে অতি সামান্য তুষারপাত এবং উচ্চভূমিতে একটু বেশি পরিমাণে তুষারপাত হয়ে থাকে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area