পরিবর্তন বা রুপান্তরের মাধ্যমে এই শিলার সৃষ্টি হয় বলে একে পরিবর্তিত বা রুপান্তরিত শিলা বলে।
উদাহরণ ঃ নিস্ , কোয়ার্টজাইট, মার্বেল, শ্লেট প্রভৃতি রুপান্তরিত শিলার উদাহরণ।
রুপান্তরিত শিলার বৈশিষ্ট্য ঃ- রুপান্তরিত শিলার বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরুপ-
I. আগ্নেয় শিলা রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হলে তা ভালোভাবে স্ফটিকযুক্ত হয়।
II. রূপান্তরের ফলে আগ্নেয় বা পাললিক শিলা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়।
III.পাললিক শিলা রূপান্তরিত হলে তার ভঙ্গুরতা কমে যায়।
IV. আগ্নেয় শিলা রূপান্তরিত হলে তা আগের তুলনায় আরো মসৃণ ও চকচকে হয়ে যায়।
V. পাললিক শিলা রূপান্তরিত হলে রূপান্তরের সময় প্রচণ্ড তাপ ও চাপের প্রভাবে শিলামধ্যস্থ জীবাশ্মগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
VI. শিলা রূপান্তরিত হলে এর মধ্যস্থিত একই ধর্মবিশিষ্ট খনিজগুলি শিলার একদিকে কাছাকাছি চলে আসে।
রুপান্তরিত শিলার শ্রেণিবিভাগ ঃ- উৎপত্তি অনুসারে রুপান্তরিত শিলাকে তিনটি উপ-বিভাগে ভাগ করা যায়-
1. আগ্নেয় শিলা থেকে সৃষ্ট রুপান্তরিত শিলা:
উদা:- গ্রানাইট > নিস্
অগাইট > হর্ণব্লেন্ড
ব্যাসল্ট > অ্যাম্ফিবোলাইট
2. পাললিক শিলা থেকে সৃষ্ট রুপান্তরিত শিলা:
উদা:- বেলেপাথর > কোয়ার্টজাইট
কাদাপাথর > শ্লেট
চুনাপাথর > মার্বেল
3. রুপান্তরিত শিলা থেকে সৃষ্ট রুপান্তরিত শিলা:
উদা:- নিস > ফিলাইট
ফিলাইট > শিষ্ট
অ্যাম্ফিবোলাইট > গ্রানুলাইট
শিলার রুপান্তরের প্রক্রিয়া ঃ- মূলত চারটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিলা রুপান্তরিত হয়।
I. তাপের প্রভাবে রুপান্তর ঃ ভূপৃষ্ঠস্থ শিলাসমূহ ভূগর্ভে চাপা পড়ে গেলে ভূঅভ্যন্তরস্থ তাপের প্রভাবে শিলার রুপান্তর ঘটে।
উদা: গ্রানাইট রুপান্তরিত হয়ে নিস
পিটকয়লা রুপান্তরিত হয়ে গ্রাফাইট
II. চাপের প্রভাবে রুপান্তর ঃ ভূপৃষ্ঠের ওপরের শিলাস্তর নিচের শিলাস্তরের উপর প্রচন্ড চাপ দিলে প্রবল চাপের প্রভাবে অভ্যন্তরের শিলাসমূহ পরিবর্তিত হয়ে নতুন শিলার রুপ ধারন করে।
উদা: কাদাপাথর রুপান্তরিত হয়ে শ্লেটপাথর
III. তাপ ও চাপের মিলিত প্রভাবে রুপান্তর ঃ প্রচন্ড চাপ ও ভূঅভ্যন্তরস্থ তাপের মিলিত প্রভাবে ভূ-গর্ভস্থ শিলাসমূহ পরিবর্তিত হয়ে অন্য এক নতুন শিলায় রুপান্তরিত হয়।
উদা: চুনাপাথর রুপান্তরিত হয়ে মার্বেল
বেলেপাথর রুপান্তরিত হয়ে কোয়ার্টজাইট
IV. রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে রুপান্তর ঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শিলামধ্যস্থ খনিজগুলি পরিবর্তিত হলে শিলার রুপান্তর ঘটে।
উদা: অ্যান্ডালুসাইট রুপান্তরিত হয়ে সিলিমেনাইট