জাঙ্গল উদ্ভিদ ও লবণাম্বু উদ্ভিদের মধ্যে যেসব পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল নিম্নরুপ---
👉 সংজ্ঞাঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
শুষ্ক মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে অতি অল্প বৃষ্টিপাতের প্রভাবে যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের জাঙ্গল উদ্ভিদ বা জেরোফাইট বলে।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
সাধারণত আর্দ্র জলবায়ুতে লবণাক্ত মৃত্তিকায় যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের লবণাম্বু উদ্ভিদ বা হ্যালোফাইট বলে।
👉 পরিবেশঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
বৃষ্টিপাত অপেক্ষা বাষ্পীভবন অধিক এবং মাটিতে প্রকট জলাভাব রয়েছে এমন শুষ্ক বা প্রায় শুষ্ক পরিবেশে জন্মায়।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
প্রচুর পরিমাণে অজৈব লবণ সমৃদ্ধ কাদামাটি ও লবণাক্ত জলের উপকূলীয় নদী মোহনা পরিবেশে জন্মায়।
👉 জীবনচক্রঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
জাঙ্গল উদ্ভিদের জীবনচক্র ক্ষণস্থায়ী থেকে দীর্ঘমেয়াদী।
অর্থাৎ, এরা একবর্ষজীবী বা বহুবর্ষজীবী হয়।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
লবণাম্বু উদ্ভিদের জীবনচক্র দীর্ঘমেয়াদি।
অর্থাৎ, এরা বহুবর্ষজীবী হয়।
👉 কোশের গঠনঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
কোশগুলির নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই, জলের প্রাপ্যতা অনুযায়ী কোশের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
কোশের নির্দিষ্ট আকার আছে, তাই কোশের কোনোপ্রকার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে না।
👉 পাতার প্রকৃতিঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
পাতাগুলি ক্ষুদ্র এবং কোনো কোনো গাছের পাতা কাঁটায় পরিণত হয়।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
পাতাগুলি আকারে ছোটো এবং পাতা কখনো কাঁটায় পরিণত হয় না।
👉 শ্বাসমূল ও ঠেসমূলঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
জাঙ্গল উদ্ভিদের কোনোপ্রকার শ্বাসমূল বা ঠেসমূল দেখা যায় না।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
লবণাম্বু উদ্ভিদের শ্বাসমূল ও ঠেসমূল দেখা যায়।
👉 অঙ্কুরোদগমঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
এই প্রকার উদ্ভিদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অঙ্কুরোদগম দেখা যায়।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
লবণাম্বু উদ্ভিদের জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম দেখা যায়।
👉 বৃদ্ধির হারঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
বৃষ্টির অভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার কম। অর্থাৎ, গাছগুলি সীমিত বৃদ্ধিসম্পন্ন।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার স্বাভাবিক। অর্থাৎ, অঙ্কুরিত গাছ দ্রুত বড় হয়।
👉 প্রধান উদ্ভিদঃ
জাঙ্গল উদ্ভিদ:
প্রধান উদ্ভিদগুলি হল- বাবলা, আকন্দ, খেজুর, ফণিমনসা, রসালো ক্যাকটাস্, ঘৃতকুমারী প্রভৃতি।
লবণাম্বু উদ্ভিদ:
প্রধান উদ্ভিদগুলি হল- সুন্দরী, গরান, গেঁওয়া, হেতাল, হোগলা, গোলপাতা, ক্যাংড়া, হারগোজা প্রভৃতি।