Ads Area

Web Design Course Admission

মরু বা শুষ্ক অঞ্চলের ক্ষয়চক্র

শুষ্ক অঞ্চলের ক্ষয়চক্র সাধারণত মরুভূমি অঞ্চলেই দেখা যায়। মার্কিন ভূতত্ত্ববিদ উইলিয়াম মরিস ডেভিস (W.M.Davis) সর্বপ্রথম এই মরু অঞ্চলের ক্ষয়চক্র সম্বন্ধে ধারণা দেন। তাঁর মতে, শুষ্ক বা মরু অঞ্চলের ভূমিরূপ মূলত আবহবিকার, প্রবহমান জলধারা ও বায়ুর সম্মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্টি হয়। মরু বা শুষ্ক অঞ্চলের এই ক্ষয়চক্র তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। ডেভিস এই ক্ষয়চক্রে তিনটি পর্যায়ের পূর্বে একটি প্রারম্ভিক পর্যায়ের কথা উল্লেখ করেছেন।

মরু ক্ষয়চক্রের বিভিন্ন পর্যায়ঃ--

ডেভিস বর্ণিত মরু অঞ্চলের ক্ষয়চক্রের পর্যায়গুলি হল নিম্নরুপ:-

প্রারম্ভিক পর্যায়ঃ

মরু ক্ষয়চক্রের প্রারম্ভিক পর্যায়ের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
◆ ভূমির প্রারম্ভিক উত্থানে কতকগুলি পর্বতবেষ্টিত অববাহিকা সৃষ্টি হয়।
◆ প্রায় প্রতিটি অববাহিকার তলদেশ সেই অঞ্চলের ক্ষয়ের শেষ সীমা হিসেবে কাজ করে।
◆ অতিরিক্ত বাষ্পীভবনের ফলে নদী উপত্যকাগুলি শুকিয়ে যায়।
◆ অববাহিকাগুলির মধ্যস্থলে সবচেয়ে নিচু জায়গায় জল জমে ক্ষণস্থায়ী প্লায়া হ্রদ সৃষ্টি হয়।


✍ যৌবন পর্যায়ঃ

এই ক্ষয়চক্রের যৌবন অবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
◆ ক্ষয়িত পদার্থসমূহ পর্বতের ঢাল বেয়ে নেমে এসে উপত্যকার সম্মুখভাগে সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণাকার ভূমি বা পললশঙ্কু গঠন করে।
◆ উপত্যকার তলদেশে চুঁইয়ে আসা জল সঞ্চিত হয়ে প্লায়া হ্রদ গঠিত হয়।
◆ অস্থায়ী হ্রদের জল বাষ্পীভূত হয়ে গেলে হ্রদের প্রান্ত বেষ্টন করে লবণের সঞ্চয় ঘটে।
◆ প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে নুড়ি ও বালির আঘাতে বায়ুর অবনমন প্রক্রিয়ায় ক্ষয়ের দ্বারা বায়ুতাড়িত গর্তের সৃষ্টি হয়।
◆ বায়ুবাহিত বালুকারাশি অববাহিকার যেখানে সেখানে বালিয়াড়ি গঠন করে।
◆ এই যৌবন অবস্থায় উচ্চভূমির ক্ষয় ও উপত্যকা ভরাট একসঙ্গে হয় বলে ভূমির উচ্চতা হ্রাস পায়।


✍ পরিণত পর্যায়ঃ

মরু ক্ষয়চক্রের পরিণত পর্যায়ে যে বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায়, সেগুলি হল-
◆ ক্ষয়ের মাধ্যমে পর্বত ঢালের পশ্চাদপসরণ ঘটতে থাকে।
◆ পাহাড়ি এলাকার পাদদেশে ক্ষয়ের ফলে ঢালের পশ্চাদপসরণ ঘটলে মৃদু ঢালযুক্ত পাদদেশীয় সমভূমি গঠিত হয়।
◆ ঢালের নিম্নাংশে নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে পলিগঠিত সমভূমি বাজাদা গঠিত হয়।
◆ পরিণত পর্যায়ে ভূমির বন্ধুরতা হ্রাস পায়। 
◆ এই পর্যায়ে জলবিভাজিকাগুলি আরও তীক্ষ্ণ হয় এবং মধ্যবর্তী নদী অববাহিকাগুলি প্রশস্ত হয়।


✍ বার্ধক‍্য পর্যায়ঃ

মরু ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য অবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
◆ বার্ধক্য পর্যায়ে ভূপ্রকৃতি প্রায় সমতল হয়ে যায়। সমগ্র অঞ্চল জুড়ে পাতলা আবরণযুক্ত শিলাময় সমপ্রায়ভূমি সৃষ্টি হয়, যা পেডিপ্লেন নামে পরিচিত।
◆ প্লায়ার প্রায় সমস্ত পলি বায়ুতাড়িত হয়ে উড়ে গিয়ে অন্যত্র সঞ্চয় করে লোয়েশ সমভূমি গঠন করে।
◆ ক্ষয়িত পদার্থসমূহ সম্পূর্নরুপে অপসৃত হওয়ার পর মরু সমভূমির উচ্চতা প্রারম্ভিক উচ্চতা অপেক্ষা অনেক কমে যায়।
◆ এই পর্যায়ের শেষ দিকে মরু সমপ্রায়ভূমির ওপর বিক্ষিপ্তভাবে ক্ষয় প্রতিরোধী কঠিন শিলায় গঠিত অনুচ্চ টিলা ইনসেলবার্জ সৃষ্টি হয়।
◆ এই পর্যায়ে বায়ুসৃষ্ট গর্ত ও বালিয়াড়ির সংখ্যা আরো বেড়ে যায়।




Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area