মহীসোপান ও মহীঢালের মধ্যে পার্থক্যঃ
মহীসোপান ও মহীঢালের মধ্যে যেসব পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল নিম্নরূপ---
👉 সংজ্ঞা
মহীসোপানঃ
সমুদ্রে নিমজ্জিত মৃদু ঢালে প্রসারিত মহাদেশের বর্ধিত অংশই হল মহীসোপান।
মহীঢালঃ
সমুদ্রের মধ্যে হঠাৎ খাড়া নেমে যাওয়া মহাদেশের প্রান্তসীমাই হল মহীঢাল।
👉 ঢালের প্রকৃতি
মহীসোপানঃ
মহীসোপান মৃদু ঢালবিশিষ্ট। এর গড় ঢাল ১° থেকে ৩°।
মহীঢালঃ
মহীঢাল খাড়া ঢালবিশিষ্ট। এর গড় ঢাল প্রায় ৫°। তবে কোনো অংশে এর ঢাল ২৫°-৩০° পর্যন্তও হয়।
👉 গড় গভীরতা
মহীসোপানঃ
মহীসোপান অগভীর সমুদ্রের অন্তর্গত।
এর গড় গভীরতা ২০০ মিটার।
মহীঢালঃ
মহীঢাল গভীর সমুদ্রের অন্তর্গত।
এর গড় গভীরতা ২০০০ - ২৫০০ মিটার।
👉 অনুভূমিক বিস্তার
মহীসোপানঃ
উপকূল থেকে সমুদ্রের দিকে মহীসোপানের অনুভূমিক বিস্তার বেশি।
মহীঢালঃ
মহীসোপানের প্রান্ত থেকে গভীর সমুদ্রের দিকে মহীঢালের অনুভূমিক বিস্তার কম।
👉 আয়তন
মহীসোপানঃ
মোট সমুদ্রতলের প্রায় ৭.৬ শতাংশ এলাকা জুড়ে মহীসোপান বিস্তৃত।
মহীঢালঃ
মোট সমুদ্রতলের প্রায় ৮.৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে মহীঢাল বিস্তৃত।
👉 সমুদ্র তরঙ্গের প্রভাব
মহীসোপানঃ
মহীসোপান অংশে সমুদ্রতরঙ্গ সক্রিয়। সমুদ্রতরঙ্গের দ্বারা ক্ষয় এবং সমুদ্রতরঙ্গ বাহিত ক্ষয়জাত পদার্থের সঞ্চয়ের দ্বারা মহীসোপান সৃষ্টি হয়।
মহীঢালঃ
মহীঢালে সমুদ্রতরঙ্গ প্রায় নিষ্ক্রিয়। তাই মহাদেশের প্রান্তভাগে খাড়া ঢালে মহীঢালের সৃষ্টি হয়।
👉 জৈব ও অজৈব পদার্থের সঞ্চয়
মহীসোপানঃ
মহীসোপান অংশে জৈব ও অজৈব পদার্থের বিপুল সঞ্চয় ঘটে থাকে।
মহীঢালঃ
মহীঢালে জৈব ও অজৈব পদার্থের সঞ্চয় খুবই সামান্য।
👉 সামুদ্রিক সম্পদ প্রাপ্তি
মহীসোপানঃ
মহীসোপান অঞ্চল সামুদ্রিক সম্পদের প্রধান উৎসস্থল। তাই, মহীসোপানের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি।
মহীঢালঃ
মহীঢাল অংশে সামুদ্রিক সম্পদ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই, মহীঢালের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক কম।