Ads Area

Web Design Course Admission

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণগুলি আলোচনা কর।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণঃ

পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে জলবায়ুর প্রকৃতি ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের স্বপক্ষে যেসব প্রমাণ উপস্থাপিত হয়েছে, সেগুলি হল নিম্নরূপ---




🔵 হিমবাহের সঞ্চালনের চিহ্নঃ
পৃথিবীর বিভিন্ন হিমবাহ অধ্যুষিত অঞ্চলে হিমবাহের অগ্রগমন ও পশ্চাদপসরণের চিহ্ন থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। গবেষণালব্ধ তথ্য থেকে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় 5000 বছর পূর্বে হিমরেখা এখনকার তুলনায় অনেকটা উঁচুতে অবস্থান করছিল এবং পরবর্তীকালে প্রায় ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ হিমরেখা অনেকটা নিচে নেমে এসেছিল এবং পরবর্তীকালে তারও আবার পশ্চাদপসরণ ঘটতে থাকে। কানাডার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হিমবাহের অগ্রগমন ও পশ্চাদপসরণের চিহ্ন রয়ে গেছে।

🔵 বরফ আবরণের গভীরতাঃ
পাইপ দিয়ে ড্রিল করে মেরু অঞ্চলের সঞ্চিত বরফ স্তরের অতি গভীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তার থেকে সেই সময়কার বায়বীয় অবস্থা সম্পর্কে জানা যায় এবং বরফের বিভিন্ন স্তরে আবদ্ধ বায়ুর বুদবুদকে বিশ্লেষণ করে অতীতের বিভিন্ন সময়ের বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর পরিমাণ সম্পর্কে জানা যায়।

🔵 লবণের আস্তরণঃ
কোনো অঞ্চলে সঞ্চিত লবণ আস্তরণ থেকে অতীতের জলবায়ু সম্পর্কে অনেকটা ধারণা লাভ করা যায়। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মরুভূমিপৃষ্ঠে যে লবণের খনি পাওয়া গেছে, তা থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে ভূতাত্ত্বিক যুগে এসব অঞ্চলে আর্দ্র জলবায়ু বিরাজ করতো। বর্তমানে যেসব অঞ্চল লবণের আস্তরণ দিয়ে আবৃত সেসব অঞ্চলে পূর্বে হ্রদের সৃষ্টি হয়েছিল। পরবর্তীকালে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে লবণ হ্রদের জল বাষ্পীভূত হয় এবং লবণ মৃত্তিকায় অধঃক্ষেপিত হয়। এভাবে লবণের আস্তরণ সৃষ্টি করে।

🔵 সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার পরিবর্তনঃ
বিগত কয়েক শতাব্দীতে গ্রীনহাউস প্রভাবে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রায় ১০-২০ সেমি বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার অনেকসময়, বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা হ্রাসের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও কমে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীজুড়ে সমুদ্র উপকূলের বেশ কিছু অংশ সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়েছে। এভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের ওঠা-নামা পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের স্বপক্ষে এক উল্লেখযোগ্য প্রমাণ।

🔵 প্রাণীর জীবাশ্মঃ
প্রাণীর জীবাশ্ম থেকে তাদের সৃষ্টির সময়কাল এবং সেই সময়কালের জলবায়ু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সমুদ্রের যেসব অঞ্চলে প্ল‍্যাঙ্কটন জাতীয় অতি সূক্ষ্ম প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, সেসব অঞ্চলের সমুদ্রের এবং তার উপরস্থ বায়ুর তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে।

🔵 উদ্ভিদ জীবাশ্মের উপস্থিতিঃ
একটি নির্দিষ্ট জলবায়ু অঞ্চলে নির্দিষ্ট প্রকৃতির উদ্ভিদ বেড়ে ওঠে। তাই, নিরক্ষীয় অঞ্চলে যে ধরনের উদ্ভিদের সমাবেশ দেখা যায়, নাতিশীতোষ্ণ বা মরুভূমি অঞ্চলে সেই প্রকার উদ্ভিদের সমাবেশ ঘটতে পারে না। আবার নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে যে প্রকার উদ্ভিদ দেখা যায়, তা নিরক্ষীয় বা মরুভূমি অঞ্চলে জন্মাতে পারে না। রাজস্থানের উড ফসিল পার্কে সরলবর্গীয় দেওদর গাছের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, অথচ এটি নাতিশীতোষ্ণ প্রকৃতির জলবায়ুতে জন্মায়। এই প্রকার উদ্ভিদ জীবাশ্ম ওই অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের স্বপক্ষে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ।








Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area