Ads Area

Web Design Course Admission

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে অসম জনবন্টনের কারণগুলি উল্লেখ কর।

পৃথিবীতে অসম জনসংখ্যা বন্টনের কারণ।
বা, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জনবন্টনের তারতম‍্যের কারণ।

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জনবন্টনের তারতম্যের কারণ গুলি হল নিম্নরূপ---

✍ প্রাকৃতিক কারণঃ 

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের জনসংখ্যা বন্টনে প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেসব প্রাকৃতিক কারণগুলি জনসংখ্যা বন্টনে উল্লেখযোগ‍্য প্রভাব বিস্তার করে, সেগুলি হল ---

🔷 ভূপ্রকৃতি

বন্ধুর ভূ প্রাকৃতিক অঞ্চলে জীবনধারণ যথেষ্ট কষ্টসাধ্য বলে মালভূমি বা পাহাড়ি অঞ্চলে জনঘনত্ব অনেক কম কিন্তু সমভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি সমতল হওয়ায় সবরকম সুযোগ-সুবিধার পরিবেশ গড়ে ওঠে, তাই জীবনধারণ  অনেকটা সহজসাধ্য। ফলে সমভূমি অঞ্চলগুলিতে অধিক জনঘনত্ব দেখা যায়।

🔷 জলবায়ু

কোনো অঞ্চলের জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য জনবন্টনের তারতম্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রক। জীবনধারণের জন্য অনুকূল না হওয়ায় উষ্ণ ও শুষ্ক মরু প্রকৃতির জলবায়ু, শীতল মেরু পার্বত্য জলবায়ু বা অতি উষ্ণ ও আর্দ্র প্রকৃতির অস্বাস্থ্যকর জলবায়ু অঞ্চলে তেমন জনবসতি গড়ে ওঠেনি। আবার অন্যদিকে, নাতিশীতোষ্ণ এবং ক্রান্তীয় প্রকৃতির জলবায়ুতে জনবসতির ঘনত্ব অধিক হয়।

🔷 মৃত্তিকার প্রকৃতি

উর্বর মৃত্তিকায় কৃষিকাজ খুব ভালো হয় বলে অধিক জনবসতি গড়ে ওঠে, একারণে উর্বর পলি ও দোআঁশ মৃত্তিকাযুক্ত অঞ্চলে অধিক জনঘনত্ব দেখা যায়। কিন্তু কাঁকুরে বা প্রস্তরময় অনুর্বর মৃত্তিকা চাষের অনুকূল না হওয়ায় এসব অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে জনবসতির ঘনত্ব অনেক কম হয়।

🔷 জলের প্রাপ‍্যতা

পানীয় জলের সহজলভ্যতাকে কেন্দ্র করে সেই প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে জনবসতি গড়ে উঠেছে। তাই যেখানে পানীয় জলের পর্যাপ্ত যোগান রয়েছে সেখানে জলের প্রাপ্যতার উপর ভিত্তি করে জনবসতির ঘনত্ব দেখা যায়। আবার পানীয় জলের ঘাটতি রয়েছে যেসব অঞ্চলগুলোতে, সেখানে জনঘনত্ব স্বল্প হয়।

🔷 খনিজ সম্পদের প্রাপ্তি

খনিজ সম্পদ উত্তোলনকে কেন্দ্র করে খনিগুলির নিকটে ঘন জনবসতি গড়ে ওঠে। অন্যান্য প্রতিকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও খনিজ সম্পদের সমৃদ্ধির কারণে খনিজ উত্তোলক অঞ্চলগুলোতে জনঘনত্ব অধিক হয়।


✍ অপ্রাকৃতিক কারণঃ

কোনো অঞ্চলের জনবন্টনে প্রাকৃতিক পরিবেশের মতো অপ্রাকৃতিক বিষয়গুলিও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। অপ্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে যেগুলি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখে সেগুলি হল---

🔷 অর্থনৈতিক অবস্থা

যে সব অঞ্চলগুলি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধ সেগুলিতে সম্পদের প্রাচুর্যতার কারণে অধিক জনবসতি গড়ে ওঠে, একারণে শিল্প-শহরাঞ্চলগুলিতে জনঘনত্ব অধিক। আবার, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা অনুন্নত অঞ্চলগুলিতে তেমন জনবসতি গড়ে ওঠে না, অর্থাৎ জনঘনত্ব অল্প হয়।

🔷 ধর্মীয় প্রভাব

ধর্মীয় ভাবাবেগের কারণে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানগুলিতে নিজস্ব ধর্মে বিশ্বাসী বহিরাগত মানুষের আগমনে জনঘনত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। যেমন- পুরি, বারাণসী, হরিদ্বার, মক্কা প্রভৃতি ধর্মীয় স্থান অধিক জনঘনত্বপূর্ণ।

🔷 সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপ

পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে শিক্ষা-সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে বা বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যার উন্নতি ঘটেছে, সেসব অঞ্চলগুলিতে জনঘনত্ব ক্রমবর্ধমান। আবার যেসব অঞ্চলে শিক্ষা সংস্কৃতি বা বিজ্ঞান প্রযুক্তির উন্নতি ঘটেনি, সেসব অঞ্চলে সম্পদের সঠিক ব্যবহার হয় না বলে জনবসতিও তেমন গড়ে ওঠে না।

🔷 রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে কোনো অঞ্চলে জনসংখ্যা বন্টনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। দেশভাগ, প্রশাসনিক কেন্দ্র স্থাপন এছাড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভৃতি কারণে জনঘনত্বের তারতম‍্য সূচিত হয়।

🔷 পরিব্রাজনের প্রভাব

পরিব্রাজন কোনো অঞ্চলের জনসংখ্যার বন্টনকে প্রভাবিত করে। অন্তর্মুখী পরিব্রাজনের ফলে বাইরের থেকে লোকের আগমন ঘটায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ জনঘনত্ব বাড়ে। আবার, বহিঃর্মুখী পরিব্রাজনের ফলে কোনো অঞ্চলের মানুষের অন্যত্র চলে যাওয়ায় সেই অঞ্চলে জনসংখ্যা হ্রাস পায় অর্থাৎ, জনঘনত্ব কমে।





Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area