কলকাতা বন্দরের সহযোগী বন্দর হিসাবে হলদিয়া বন্দর গড়ে ওঠার কারণ
🔶 হুগলি নদীর গভীরতা হ্রাস
কলকাতা বন্দরের নিকট হুগলি নদীর গভীরতা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। ফলে বড় বড় জাহাজ বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হয়। এই অসুবিধা দূর করার জন্য কলকাতা বন্দরের পরিপূরক হিসাবে প্রায় ১০ মিটার গভীরতাযুক্ত হুগলি-হলদি নদীর সঙ্গমস্থলে হলদিয়া বন্দর গড়ে তোলা হয়েছে।
🔶 বাঁকবিহীন সরল নদীপথ
কলকাতা বন্দরে জাহাজগুলিকে প্রবেশ করতে অসংখ্য নদীবাঁক অতিক্রম করতে হয়, যা অসুবিধার সৃষ্টি করে। অন্যদিকে, হলদিয়া বন্দরে প্রবেশপথে নদীটির বাঁকের সংখ্যা অনেক কম। ফলে অসুবিধা দূর করতে বাঁকবিহীন সরল পথে হলদিয়ায় বন্দর নির্মাণ করা হয়েছে।
🔶 অল্পসংখ্যক বালুচর অতিক্রম
কলকাতা বন্দরে জাহাজগুলিকে প্রবেশ করতে হলে ৬ টি বালুচর অতিক্রম করতে হয়। কিন্তু সেই তুলনায় হলদিয়া বন্দরে প্রবেশ করতে হলে জাহাজগুলিকে মাত্র ৩ টি বালুচর অতিক্রম করতে হয়। ফলে ব্যায়ও কম হয় এবং সময়েরও সাশ্রয় হয়।
🔶 উন্নত পশ্চাদভূমি
পূর্ব ভারতের জনবহুল রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ সহ বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড প্রভৃতি রাজ্যের বিস্তৃত পশ্চাদভূমি অঞ্চলের উন্নত কৃষি ও শিল্পজাত দ্রব্য প্রেরণ বা কৃষি, শিল্প যন্ত্রপাতি আনয়নের প্রয়োজনার্থে হলদিয়া বন্দর গড়ে তোলা হয়েছে।
🔶 জমির সহজলভ্যতা
কলকাতা শহর থেকে অনেকটা দূরে অবস্থানের কারণে হলদিয়া বন্দর সংলগ্ন অংশে সুলভ মূল্যে প্রয়োজনীয় জমি পাওয়ার সুবিধা হয়েছে। জমির এই সহজলভ্যতা হলদিয়াতে বন্দর স্থাপনের অন্যতম সহায়ক কারণ।
🔶 উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা
হলদিয়া বন্দর এবং এর পশ্চাদভূমি ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কপথ এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ফলে ব্যয় হ্রাসের জন্য পণ্য খালাস করতে বর্তমানে কলকাতা বন্দরের পরিবর্তে হলদিয়া বন্দরে জাহাজ প্রবেশের সুবিধা অনেক বেশি।
🔶 বন্দরকেন্দ্রিক শিল্পাঞ্চল
ভারতের বন্দরকেন্দ্রিক শিল্পাঞ্চল সর্বপ্রথম হলদিয়াতেই গড়ে তোলা হয়। ফলে শিল্পাঞ্চলকে কেন্দ্র করে পণ্য রপ্তানি সহ প্রয়োজনীয় আধুনিক শিল্প যন্ত্রপাতি আমদানি প্রভৃতির কারণে হলদিয়া বন্দরের দ্রুত বিকাশ ঘটে।